নিউজ ডেস্ক: সিঙ্গুর : শৈশবে অনেকেরই সঙ্গী ছিল ‘তোত্তো চান’ বইটি ৷ তেৎসুকো কুরোয়ানাগির লেখা এই বইটি জাপানি থেকে অনূদিত হয়েছে বাংলা-সহ নানা ভাষায় ৷ তেৎসুকোর নিজের জীবনের অভিজ্ঞতায় তুলে ধরা হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমসাময়িক জাপানে এক বালিকার গল্প ৷ সে গল্প জুড়ে আছে বালিকার স্কুলবাড়িটি ৷ যেটা দেখতে ছিল অবিকল এক রেলগাড়ির মতো ৷ গল্পের শেষে সবই বিধ্বস্ত হয়ে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের করাল গ্রাসে ৷ কিন্তু সেই রেলগাড়ির মতো স্কুলবাড়ি রয়ে গিয়েছে বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য শিশুর চোখে ৷
![]() |
Singur Train School: চার দেওয়ালের স্কুলবাড়ি নয়, রেলগাড়িতে বসেই পড়াশোনা করবে অসংখ্য ‘তোত্তো চান |
জাপানি ভাষায় তোত্ত চান শব্দের অর্থ ছোট্ট মেয়ে৷ পরবর্তী প্রজন্মের তোত্তোচানদের জন্য অনেক জায়গায় তৈরি হয়েছে পাঠশালা-ট্রেন (Trainlike school) ৷ এ বার ট্রেনের আদলে তৈরি হল অঙ্গনওয়াড়ি স্কুল ৷ শিশুদের স্কুলমুখী করতে সিঙ্গুরের (Singur) বেড়াবেড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের মধুসূদনপুর গ্রামে তৈরি হয়েছে সুসংহত শিশু বিকাশ কেন্দ্র । মহাত্মা গান্ধি জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্যারান্টি স্কীম এর আওতায় আট লক্ষ নব্বই হাজার টাকা ব্যয়ে সৌরশক্তিচালিত তৈরি হয়েছে ২৪৪ নং সেন্টার। স্কুলে বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয় করা হয়েছে সৌরশক্তির মাধ্যমে। স্কুলে মোট ৪০ জন কচিকাঁচা পড়াশোনা করে।
মঙ্গলবার এই স্কুলের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা সিঙ্গুরের বিধায়ক বেচারাম মান্না। বিনা টিকিটের ট্রেন যাত্রা ও ট্রেনের বগিতে বসে পড়াশোনা, খেলা ও মিড ডে মিল উপভোগ করছে কচিকাঁচারা। খুশি অবিভাবকরাও। সবুজ পতাকা নাড়িয়ে ট্রেন চালু করার আনন্দ পড়ুয়াদের। দূর থেকে দেখলে মনে হবে, স্টেশনে দাঁড়িয়ে রয়েছে আস্ত একটা ট্রেন ।
বিদ্যালয়ের প্রতি পড়ুয়াদের আকর্ষণ তৈরি করার জন্য এই ট্রেন মডেল কার্যকর বলে দাবি অভিভাবিকাদের। এই উদ্যোগে শিশুদের মনে পড়াশোনা সম্পর্কে এক নব দিগন্ত দেখা দেবে বলে জানিয়েছেন অঙ্গনওয়াড়ীর কর্মী থেকে শুরু করে সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ। এই রকম নতুন ধারণায়, নতুন আঙ্গিকে যদি শৈশবকে পড়াশোনার বন্ধনে আবদ্ধ করা যায় তাহলে বিদ্যালয়ের সাথে ছাত্রসমাজ প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ হবে। সেরকমই মনে করছে অভিভাবক মহল৷ এই প্রচেষ্টার পিছনে স্বপ্ন হল, খেলার সঙ্গেই শৈশব হাঁটুক পড়াশোনার পথে৷