ইনস্টিটিউটের সদস্য রথীন শীল অবশ্য স্থানীয় বাসিন্দাদের অলৌকিক বা ঐশ্বরিক তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছেন৷ রিষড়া বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সদস্য রথীন শীল জানাচ্ছেন, রাসায়নিক বিষক্রিয়ার জন্যই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। যদিও এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র আলোড়ন তৈরি হয়েছে। ঘটনাটি ঠিক কী?জেনে নিন বিস্তারিত…
অলৌকিক! ভৌতিক! নানা মুনির নানা মত৷ রিষড়ার একটি পুকুর থেকে হঠাৎই আলো বিচ্ছুরিত হওয়ার দৌলতে এমনই মন্তব্য করছেন এলাকার মানুষজন৷ উঠে আসছে দেবদেবীর উপাখ্যানের গল্পও৷ আর তা দেখতে পুকুরের ঘাটে দলে দলে ভিড় জমাচ্ছেন এলাকার লোকজন৷ তবে রিষড়া বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সদস্য রথীন শীল অবশ্য স্থানীয় বাসিন্দাদের অলৌকিক বা ঐশ্বরিক তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, কোনও রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলেই এমন হচ্ছে৷ স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যাবেলা পুকুরের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন আচমকাই জল থেকে আলো বিচ্ছুরিত হতে দেখেন। মনে হচ্ছে, জলের মধ্যে যেন হ্যালোজেন জ্বলছে। আর অদ্ভুত এই দৃশ্য দেখতে উপচে পড়ছে ভিড়। ভিড় সামলাতে রিষড়া থানার পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে। লোকের মুখে মুখে ফিরছে নানান অলৌকিক গল্পকাহিনি। এই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে রিষড়া পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের পদ্মপুকুরে। সন্ধ্যাবেলায় পুকুরের মাঝখানে এই দৃশ্য দেখার পর স্থানীয় যুবকরা পুকুরে নেমে ওই জায়গাটি লাঠি দিয়ে ঘেঁটে দিলে, কিছুক্ষণ উধাও হয়ে যাওয়ার পর ফের ওই আলোর বিকিরণ হতে দেখা যাচ্ছে।
উৎসুক জনতার বিশ্বাস, এটা দেবতার লীলা। স্থানীয় কিছু গৃহবধূর মতে, এই পুকুরে বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে একসময়। এই অলৌকিক ঘটনার সঙ্গে তার কিছু যোগসূত্র রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা স্বাতী সাঁতরা বলেন, ‘‘সোমবার সন্ধ্যাবেলা এখানে এসে দেখি পুকুর থেকে আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছে৷ তখন পুকুরে নেমে স্থানীয়রা লাঠি দিয়ে ওই জায়গায় খুঁচিয়ে দেখেন৷ যদিও তাতে আলোটা কিছুক্ষণ গায়েব হয়ে যায়৷ কিছুক্ষণ পর ফের দেখা দেয়৷ আজ সকালে সূর্যের আলোতে ওই আলোর বিকিরণ দেখা যায়নি বলে রাতে এসেছি৷ যথারীতি আলোর বিকিরণ হচ্ছে৷’’ স্থানীয় বাসিন্দা ছোটন সরকার বলেন, ‘‘ সোমবার থেকেই এখানে আলোর মতো কিছু জ্বলছে৷ এটা দেখেই এলাকার লোকজন এখানে ভিড় জমায়৷ এরপর পাড়ার কয়েকজন যুবকও নেমেছিল জলটা ঘেঁটে দেখার জন্য৷ কিন্তু ঘণ্টাখানেক পর ফের সেখান থেকে আলোর শিখা দেখা যায় আবারও৷ একটা লাল আলোর মতো শিখা জ্বলছে৷’’ আর এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘পুকুরে নেমে একটা শাঁখা আর কিছু প্লাস্টিক ছাড়া আর কিছু পাইনি৷’’
যদিও রিষড়া বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সদস্য স্থানীয় বাসিন্দা রথীন শীল অবশ্য মানছেন না এই অলৌকিক তত্ত্ব। তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, একটা রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে এই আলো জ্বলছে৷ এতে অন্য কোনও কারণ নেই৷ এখানে ভৌতিক বা ঐশ্বরিক কোনও ব্যাপার নেই বলেই আমার বিশ্বাস৷’’
তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন সংস্কার হয় না এই পুকুর। তাই গাছপাতা পচে তা থেকে নির্গত গ্যাসও হতে পারে৷ তবে পুরোটাই পরীক্ষার বিষয়। তবে যাই হোক না কেন যত এই খবর ছড়াচ্ছে, তত বিভিন্ন এলাকার মানুষ এসে উপস্থিত হচ্ছেন এই আলেয়া দেখতে। একে অলৌকিক, সুপ্রিম অফ পাওয়ার অ্যাখ্যা দিচ্ছেন এলাকার মানুষজন৷