Howrah: ঈশ্বরকণা আবিষ্কারে নাম জুড়ল হাওড়ার শ্রমিকদের, দেওয়া হবে সম্বর্ধনা

 Howrah New Invention: গবেষণায় ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গে যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল, তার একটি অংশ তৈরি করেছিলেন হাওড়ার লেদ কারখানার শ্রমিক কালীপদ প্রামাণিক ও তাঁর সঙ্গীরা।


ইতিহাস (History) তৈরি করেছেন হাওড়ার (Howrah) লেদ কারখানার সাধারণ শ্রমিকরা। মাত্র ৩ মাসে তৈরি করে দিয়েছেন এমন এক যন্ত্রাংশ, যা কয়েক বছর আগে কাজে লেগেছে জেনিভার (Geneva) পরমাণু গবেষণাকেন্দ্র সার্নের ঈশ্বরকণা (God's Particle) আবিষ্কারে। আগামীকাল, মে দিবসে (May Day) সম্বর্ধনা দেওয়া হবে সেই সব শ্রমিকদের। উপস্থিত থাকবেন বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ।

সালটা ২০১২। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর খোঁজ মিলল গডস পার্টিকল বা ঈশ্বর কণার। কিন্তু সেদিন জানা যায়নি জেনিভার অদূরে সার্ন গবেষণাগারে মাটির ১০০ মিটার গভীরে লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার যন্ত্রে ঈশ্বর কণার অস্তিত্ব নিয়ে যে গবেষণা করছিলেন বিজ্ঞানীরা, সেই গবেষণায় জুড়ে গিয়েছেন হাওড়ার লেদ কারখানার কয়েকজন শ্রমিকের নাম। 

গবেষণায় ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গে যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল, তার একটি অংশ তৈরি করেছিলেন হাওড়ার লেদ কারখানার শ্রমিক কালীপদ প্রামাণিক ও তাঁর সঙ্গীরা। প্রধান মিস্ত্রি কালীপদ প্রামাণিক বলেন, ড্রইং অনুযায়ী মাপজোক করে কাজ করতাম।প্লেটের কাজ এতটাই নিখুঁত হয় যে তাদের মধ্যে দিয়ে আলো পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারত না। বিভিন্ন সময় সাহেবরা ইনস্পেকশনে আসতেন।

দাশনগরের শ্রমিক প্রকাশ ভট্টাচার্য বলেন, "নতুন লেদ মেশিনে ড্রইং অনুযায়ী কাজটা করতাম। কালীপদবাবু এসে পুরো কাজটার তদারকি করতেন। চক্রাকার মাঝখানে গর্ত যুক্ত আটটি প্লেট করতে তার তিন মাস সময় লেগেছিল।" 



সার্নের ওই গবেষণায় যুক্ত হয় ভারতের সাহা ইন্সটিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স। বিশিষ্ট বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহের নেতৃত্বে দেশের এক ঝাঁক বিজ্ঞানী ওই কাজে হাতে লাগান। হাওড়ার যে কারখানায় যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছিল, সেই জায়গা আর শ্রমিকদের দেখে আঁতকে উঠেছিলেন সার্নের বিজ্ঞানীরা।                    

বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ বলেন, "সার্নের বিজ্ঞানীরা হাওড়ার ওই কারখানা দেখে আঁতকে উঠেছিলেন। বলেছিলেন এখানে এই কাজ হবে না। তখন কালীপদবাবু বলেন তাদেরকে একটা সুযোগ দিতে। হাওড়ার ছোট কারখানার শ্রমিকরা সাধারণ যন্ত্র দিয়ে মাত্র তিন মাস সময়ে ১০০% নিখুঁত যন্ত্রাংশ তৈরি করেন। যা সার্ণের গবেষণাগারে গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগে।" 

সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, "এই ধরনের শ্রমিকরা জীবন্ত বিশ্বকর্মা। এঁদের জন্য হাওড়াকে বলা হত শেফিল্ড অফ ইস্ট। এদের অবদানের জন্য মে দিবস উপলক্ষে তাদেরকে সম্বর্ধনা দেওয়া হবে।" এক সময় ‘ভারতের শেফিল্ড’ বলে পরিচিত ছিল হাওড়া শিল্পাঞ্চল। সময়ের সঙ্গে ম্লান হয়েছে সেই কৌলিন্য। কালীপদদের কৃতিত্ব নতুন পালক জুড়ল জেলার মুকুটে।

সৌজন্যে: এবিপি


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please Type Your Valuable Feedback.
Keep Supporting. Flow as on YouTube & Facebook.

নবীনতর পূর্বতন