নিউজ ডেস্ক: সব ব্যবস্থা থাকার সত্ত্বেও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রেলের ছাপাখানা। যেই ছাপাখানায় রয়েছে কয়েক কোটি টাকার আধুনিক মুদ্রণ যন্ত্র এবং প্রশিক্ষিত কর্মী। তাই প্রশ্ন উঠছে , কেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রেলের ছাপাখানা? যদিও সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশের জেরে কাগজের অভাবে হাওড়ায় রেলের ছাপাখানার ২৯১ জন কর্মীর বিশেষ কোনও কাজ নেই। আর সেইজন্য ২০২৩ সালের মে মাসে রেল মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী ছাপাখানা বন্ধ করার, কর্মীদের বদলি এবং যন্ত্রপাতি ও জমি বিক্রির কথা বলা হয়েছিল।এই ঘটনা যদি ঘটে তাহলে সংরক্ষিত, অসংরক্ষিত টিকিট, রিজার্ভেশন স্লিপ এবং কর্মীদের সার্ভিস ফাইলের নথি–সহ সব ছাপার কাজই বন্ধ হয়ে যাবে। রেলের কর্মী ইউনিয়নের অভিযোগ যে একই কাজ বাইরে থেকে বেশি মূল্যে করা হচ্ছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সময়ে রেলের সব ছাপাখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল রেল কর্তৃপক্ষ। ২০১৭ সালে ১৪টি ছাপাখানার মধ্যে ৯টি ছাপাখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর বাকি পাঁচটি ছাপাখানা—মুম্বই, হাওড়া, নয়াদিল্লি, চেন্নাই, সেকেন্দরাবাদ - এ রেলের ছাপাখানা রয়েছে তা তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। এগুলির মধ্যে চেন্নাই এবং নয়াদিল্লিতে কর্মীর অভাবে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে ছাপাখানায়। চালু রয়েছে হাওড়া, মুম্বই, সেকেন্দরাবাদে থাকা ছাপাখানা। ফলে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়ে যাবে রেলের। কারণ ওই যন্ত্রপাতি বিক্রি করে সরকারের কাছে টাকা আসবে যার ভাগ রেল পাবে না বলেই মনে করছেন কর্মীরা।
অপরদিকে হাওড়ার ছাপাখানায় ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর ২২ কোটি টাকা ব্যয় করে আধুনিকীকরণ করা হয়। বার্সেলোনা থেকে আধুনিক প্রযুক্তির মুদ্রণ যন্ত্র নিয়ে আসা হয় যেখানে ,সেখানে পূর্ব রেল, দক্ষিণ–পূর্ব, পূর্ব–মধ্য, উত্তর–পূর্ব সীমান্ত রেল এবং মেট্রো রেলের প্রয়োজনীয় নথি ছাপা হয়। পূর্ব রেলে ২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সাড়ে ১২ কোটি টাকার কাজের চাহিদা রয়েছে বলে সূত্রের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে। এখানে বহু জরুরি নথি ছাপা হওয়ার সত্ত্বেও কেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ৷ এখানে যে মানের কাগজ লাগে সেটা সরাসরি ক্রয় করতে পারে না হাওড়ার ছাপাখানা যার জন্য মুম্বই ছাপাখানার মাধ্যমে কাগজ আসে। তাই কাগজের অভাবে কাজ বন্ধ থাকে। তাই এই ছাপাখানা বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া এই ছাপাখানায় এখন অনেক বাড়তি কর্মী রয়েছেন এবং বেশিরভাগ কাজই হয় অনলাইনে। আসন সংরক্ষণ থেকে শুরু করে টিকিট কেনা সবই করা যায় অনলাইনে। আবার কম খরচে বাইরে থেকে ছাপার কাজ করা যায়। অথচ ছাপাখানা নিজস্ব আয় বাড়ানোর চেষ্টা করেনি বলে অভিযোগ রেলের একশ্রেণির অফিসারদের।যদিও কর্মী সংগঠনের পাল্টা দাবি করেছেন, টিকিটে বিজ্ঞাপনের জন্য ১.৪০ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন জোগাড় করেছেন। ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, ‘কাজের সুযোগ না দিয়ে সংস্থাকে মেরে ফেলা হচ্ছে। সম্পত্তি বিক্রিই করাই লক্ষ্য।’