কোন্নগরে শিশু খুনে ৯দিন‌ পুলিশি হেফাজতের পর এবার ১৪ দিনের জেল মা ও বান্ধবীর

  নিজস্ব সংবাদদাতা , হুগলি : কোন্নগরে মর্মান্তিক শিশু খুনের ঘটনায় ধৃত মা ও তার বান্ধবীকে ফের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল শ্রীরামপুর আদালত।


গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি কোন্নগর আদর্শ নগরের  বাসিন্দা পঙ্কজ ও শান্তা শর্মার আট বছরের শ্রেয়াংশুকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়।সেদিন সন্ধায় বাড়িতে কেউ ছিলোনা।টিভি দেখছিল শ্রেয়াংশু।মাথায় থান ইট দিয়ে আঘাত করে মূর্তি দিয়ে মেরে ছুরি দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়।ঘটনার চার দিন পর গ্রেফতায় হয় শিশুর মা ও বান্ধবী। ঘটনার তদন্তে নেমে চার দিন পর নিহত শিশুর মা শান্তা ও তার বান্ধবী ইফফাত পারভীনকে গ্রেফতার করে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ।

নয় দিনের পুলিশ হেফাজত শেষে আজ শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হয় শিশুর মা ও তার বান্ধবীকে। আজ আদালত ফের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

শিশুর মা শান্তা শর্মা দাবী করেন তিনি এই বিষয়ে কিছুই জানেন না। বান্ধবী তার সন্তানকে খুন করেছে কিনা  প্রশ্ন করা হলে তিনি নীরব থাকেন।

অভিযুক্তদের আইনজীবী সৈকত মন্ডলের বক্তব্য, ৩০২ ধারায় খুনের মামলা দায়ের হওয়ার কারণে জামিন দেয়নি শ্রীরামপুর আদালত । পাশাপাশি আইনজীবীর দাবী,অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমান দেখাতে  পারেনি পুলিশ।ফোন আর সিসি টিভি দেখিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে যে অভিযুক্তরাই দোষী।

সরকার পক্ষের বিশেষ আইনজীবী অরুন আগরওয়াল এই বিষয়ে বলেন, তদন্তকারী অফিসার সঠিক তদন্ত করছেন। দু বছর আগের কল রেকর্ড,পিসির সময় একটা রক্তমাখা রুমাল পেয়েছেন।আরও অনেক কিছু সিজ করেছেন।

মামলার সরকারি আইনজীবী সুদীপ সরকার বলেন, অভিযুক্তরা পুলিশ হেফাজতে থাকা কালিন ঘটনাস্থলের কাছে একটি রক্তমাখা রুমাল পাওয়া গেছে । ইফফাত পারভিনের দেখানো জায়গা থেকে। এছাড়া বেশ কিছু জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।সিআইডি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করেছিল । তার সঙ্গে আদালতে অভিযুক্তদের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে তা মিলিয়ে দেখা হবে। সিসিটিভি তে ইফফাত পারভিনকে হেঁটে যেতে দেখা গেছে। সেটাও দেখা হবে। তদন্ত এখনো চলছে।


তবে  এই প্রসঙ্গে পুলিশ সূত্রে খবর, পুলিশ হেফাজতে থাকা কালিন বান্ধবী ইফফাত পারভিনকে সপাটে চর মারেন শান্তা শর্মা।  

 কোন্নগরের কানাইপুরে একটি দু কাঠা জমি কিনেছিলেন শান্তা। সেই জমি বিক্রি করে ফ্ল্যাট কিনে বান্ধবীর সঙ্গে থাকার পরিকল্পনা ছিল তার । স্বামী পঙ্কজের মাথার টাক পছন্দ ছিল না শান্তার। বান্ধবী ইফফাতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ায়  সন্তান। তাই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোককে শিক্ষা দিতে সন্তানকে খুনের পরিকল্পনা করে  মা, এমনই মনে করছে তদন্তকারীরা। শান্তার বান্ধবী ইফফাত  সেই পরিকল্পনার রূপ দেন।  তবে শিশু খুনে যে নৃশংসতা দেখা গেছে তাতেই হয়ত প্রিয় বান্ধবীর প্রতি বিরক্ত শান্তা।  লকআপে  বান্ধবীকে চড় মারার ঘটনায় এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।





Shrabani Munsi

শ্রাবণী মুন্সী। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিনিকেতন থেকে সংস্কৃত বিষয়ে স্নাতকোত্তর। আকাশবাণী কলকাতার যুববাণী বিভাগের উপস্থাপিকা। সাংবাদিকতার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। কাজকর্ম ও পড়াশোনার পাশাপাশি আবৃত্তি চর্চা ও গল্পের বই পড়ার অভ্যেস রয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please Type Your Valuable Feedback.
Keep Supporting. Flow as on YouTube & Facebook.

নবীনতর পূর্বতন