নিউজ ডেস্ক - পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগের প্লে-অফে কখনও হারেনি মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কিন্তু সেই রেকর্ড ভেঙে গেল শুক্রবার। উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধনী সংস্করণে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং দ্বিতীয় সংস্করণে সকলের আগে হরমনপ্রীতরাই প্লে-অফ নিশ্চিত করেন। কিন্তু ফাইনালে ওঠা হল না। লিগ পর্বে আরসিবির কাছে হেরেছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। এলিমিনেটর ম্যাচে ৯০ শতাংশ সময় তারাই অ্যাডভান্টেজ ছিল। শেষ ২ ওভারে খেলা ঘুরে যায় আরসিবির পক্ষে। প্রথম বার ফাইনালে উঠলো আরসিবি। তাঁদের অপেক্ষায় দিল্লি ক্যাপিটালস।
গত মরসুমের তুলনায় এই মরসুম ভালো পারফর্ম করছিল আরসিবি। তবে ধারাবাহিকতা নিয়ে অস্বস্তি ছিলই। প্রথম সংস্করণে লিগ পর্বেই ছিটকে গিয়েছিল তাঁরা। এ বার ফাইনালে আরসিবি। এলিমিনেটর ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর।কিন্তু শুরুতেই ঘটে এক আশ্চর্য ঘটনা ।দেখা যায় সোফি ডিভাইন স্ট্রাইকে। বোলিং করছেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের তারকা পেসার শবনিম ইসমাইল। বল সোফির ব্যাট থেকে বুটে লাগে। উইকেটের সঙ্গে বলের কোনও সংযোগ হয়নি। অথচ উইকেটের লাইট জ্বলে ওঠে। সকলেই এই দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে যান।
কিন্তু সোফি ডিভাইনের ইনিংস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। হেইলি ম্যাথুজের বলে বোল্ড হোন তিনি। পরের ওভারেই বড় শট খেলতে গিয়ে ন্যাট সিবারের বোলিংয়ে আউট আরসিবি ক্যাপ্টেন স্মৃতি মান্ধানা। চারে নামা দিশা কাসাত ডট বলের চাপে আউট। দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে আরসিবি। ক্রিজে এলিস পেরির সঙ্গে যোগ দেন ফর্মে থাকা রিচা ঘোষ। এই জুটি একটা সম্ভাবনা তৈরি করলেও দ্রুতই ভেঙে পড়ে। রান রেট বাড়ানোর চেষ্টায় আউট রিচাও। আরসিবি ইনিংসকে কার্যত একার হাতে টানেন এলিস পেরি। তাঁর ৫৫ বলে ৬৬ রানের ইনিংসের সৌজন্যে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩৫ রান করে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। নকআউটের ম্যাচে এই রান কম বলা যায় না। যদিও প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।
শেষ দিকে ম্যাচ রুদ্ধশ্বাস হয়ে ওঠে। ১৩৬ রান পুরন করতে নেমেছিল মুম্বই। দলীয় ১২০ রানে ক্যাপ্টেন হরমনপ্রীতের উইকেট হারায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। তখনও ২ ওভারে চাই ১৬ রান। ক্রিজে তুলনামূলক অনভিজ্ঞ দুই ব্যাটার। আরসিবি সমর্থকরা তখন আশা ছাড়েনি । আর স্মৃতির আস্তিনে লুকোনো ছিল "আশা"। হ্যারির আউটে চাপে পড়ে গিয়েছিল মুম্বই। স্লগ ওভার স্পেশালিস্ট সোফি মলিনিউ স্নায়ুর চাপ সামলে ১৯তম ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করেন।
শেষ ওভারে মুম্বইয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২ রান। এ মরসুমেই অভিষেক হওয়া আশা শোভানাকে আক্রমণে আনেন স্মৃতি। পরিস্থিতিটা হয়ে ওঠে লটারির মতো। যে কেউ যখন তখন জিততে পারে। উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগে আশা নবাগত হলেও ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রচুর অভিজ্ঞতা রয়েছে। দ্বিতীয় বলে স্ট্রাইক পান অ্যামেলিয়া কের। তাঁকে সামলানোই চ্যালেঞ্জ ছিল আরসিবির। ৩ বলে ৮ রানের টার্গেট। বড় শট খেলা ছাড়া উপায় ছিল না। জোড়া স্টাম্পিং রিচা ঘোষের। পঞ্চম বলে সিঙ্গল নিতেই ম্যাচ আরসিবির হাতে ছলে আসে । শুধু একটা লিগ্যাল ডেলিভারি করা এবং ছয় আটকানো প্রয়োজন ছিল। আশা শোভানা সিঙ্গল দিয়ে ইঙ্গিতের মাধ্যমে বোঝান, "আমি আছি তো"!