নিউজ ডেস্ক: নির্বাচনী আবহে টাটকা সন্দেশখালির স্মৃতি। রাতের বেলা গ্রামের মহিলাদের ডেকে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছিল সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শেখ শাহজাহানের সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে। একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ নিয়ে গর্জে উঠেছিল সন্দেশখালির মহিলারা। যা নিয়ে তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল বঙ্গ রাজনীতি। সন্দেশখালি ঘটনার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই খবরের পাতায় উঠে এলো আরো এক সন্দেশখালি। তবে এবার হাওড়ায়।
সন্দেশখালি ঘটনায় পিঠে বানানোর নামে রাতে দলীয় কার্যালয়ে তলবের অভিযোগ উঠেছিল দিনহাটাতে। কার্যত সেই একই ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখা গেল হাওড়ার আমতা চন্দ্রপুরে।
মদ বানানোর নাম করে রাত্রিবেলা মহিলাদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হত বলে অভিযোগ। চলত কাপড় ধরে টানাটানি। অভিযোগের তির এলাকার তৃণমূল নেতাদের দিকে।
এলাকার একাধিক মহিলার দাবি মদ বানানোর নাম করে রাতের বেলা তাদেরকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হতো। চলতো নির্যাতন। ঘটনা এতটাই বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছয় যে তারা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তবে সুরাহা হয়নি কিছুই উল্টে পুলিশ অভিযুক্তদের সাহায্য করে বলে অভিযোগ গ্রামের মহিলাদের।
শেষ পর্যন্ত গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হন ওই মহিলারা। প্রায় চার বছর পর বৃহস্পতিবার ঘরে ফেরেন চন্দ্রপুরের এক মহিলা। বাড়ি ফিরে দেখেন বাড়ি জঞ্জাল আর ঝোপঝাড়ে ঢেকে গিয়েছে।
ওই মহিলার দাবি,"“চার বছর পর ফিরলাম। এখন দেখছি চারদিকে জঙ্গল হয়ে গিয়েছে। ওরা রাতে থাকতে দিত না। নারীদের উপর নির্যাতন করে। মেয়েদের কাপড় ধরে টানাটানি করে। মদ বিক্রি হয়। মদের প্যাকেট করার জন্য ডাকে। রাতে মদের প্যাকেট তৈরির জন্য ডাকে মানে তো সবটাই বুঝতে পারছেন। বলতেও লজ্জা পাচ্ছি। স্বপন খাঁড়া, স্বপন খাঁড়া ওরাই ডাকে। ওরাই চোলাই মদ বিক্রি করে। এলাকার তৃণমূল নেতা। যাইনি বলে মারধর করেছে। বাড়ির ছেলেদেরও মারধর করেছে। ওরাও ঘর ছাড়া। পুলিশ নিজে এসে মেরেছে। এখন এই বাড়িতে ফিরলেও থাকব কী করে বুঝতে পারছি না।”
অন্যদিকে এই অভিযোগ প্রসঙ্গে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন খাড়ার বক্তব্য,"আমি মদ খাই না। আমি চোলাই বিক্রিও করি না। এলাকার আরও লোকজনকে জিজ্ঞেস করলেই সবটা জানতে পারবেন স্বপন খাঁড়া কোন ধরনের ছেলে। ওরা আমার ভাইকে মার্ডার করেছে। সেই সূত্রপাতে ওরা ঘর ছাড়া ছিল। আমি নিজে তো এখানেও থাকি না। ভাড়া ঘরে থাকি। ওরা যে অভিযোগ করছে পুরোটাই মিথ্যা অভিযোগ। "
ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক ছাপানোতর। ভোটের মুখে এহানও ঘটনাকে হাতিয়ার করতে ছাড়েনি বিজেপি। হাওড়া জেলার বিজেপি নেতা তথা উলুবেরিয়া লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অরুণ উদয় পাল চৌধুরীর কথায়,"গোটা বাংলার নানা জায়গাতেই সন্দেশখালির মতো এই ছবি আছে। ভয়ে মানুষ ভয়ে কথা বলে না। উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রেও এরকম অনেক জায়গা যেখানে প্রতিনিয়ত মায়েরা লাঞ্ছিত হচ্ছে। চন্দ্রপুরের মায়েরা আজ চার বছর ধরে ঘর ছাড়া। সেখানেও সন্দেশখালির মতো তাঁদের রাতে ডাকা হতো।”