নিউজ ডেস্ক: ভয়ংকর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল ডুয়ার্সের বিখ্যাত হলং বনবাংলো। মঙ্গলবার রাত নটা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। হঠাৎই আগুন ধরে যায় হলং বন বাংলোতে। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের দুটি ইঞ্জিন তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই ভষ্মিভূত হয়ে যায় বাড়ির বেশিরভাগ অংশ।
তবে বাড়িটির বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেলেও হতাহতের কোন খবর নেই কেননা প্রতি বছরের মতোই 15ই জুন জলদাপাড়া অভয়ারণ্যটি বন্ধ করে দেওয়া হয় পর্যটকদের জন্য । তাই এই সময় কোন পর্যটক না থাকায় কোনরকম বড়সড়ো দুর্ঘটনা না ঘটলেও বাংলোটি যেভাবে পুড়ে গিয়েছে তাতে কয়েক কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
বন দপ্তরের সচিব বিবেক কুমার রাতে বলেন, 'সম্ভবত বাংলোর গ্রাউন্ড ফ্লোরে ইলেক্ট্রিক বক্স থেকে শর্ট সার্কিটের ফলে আগুন ছড়ায়। কর্মীরাই প্রথমে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের সাহায্যে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তার মধ্যে আবার এসিতে আগুন লেগে যায়। এসি-তে যে গ্যাস থাকে, তা থেকে সম্ভবত বিস্ফোরণ ঘটেছে। তার জেরে হলং বাংলোটির বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গিয়েছে।'
প্রসঙ্গত ডুয়ার্সের মাদারিহাটে জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের মধ্যে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী হলং বন বাংলোটি। জঙ্গলের নিস্তব্ধতার মধ্যে বন্য পশুদের সান্নিধ্য পেতে কলকাতা সহ বিভিন্ন দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে এই বাংলাটি ছিল অন্যতম প্রিয় একটি স্থান। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর অত্যন্ত প্রিয় একটি জায়গা ছিল এই বাংলো অনেক সময়ই তিনি তার পরিবার নিয়ে এই বাংলোয় সময় কাটিয়েছেন। ঐতিহ্যবাহী এই বাড়িটি পুড়ে যাওয়ায় মন খারাপ করছেন অনেক পর্যটকই।
আগুন লাগার সঠিক কারণ অনুসন্ধানে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে বনদফতর সূত্রে খবর বাংলায় পর্যটক না থাকলেও বাংলোটি দেখাশোনা করার জন্য কয়েকজন বনদপ্তরের কর্মী সেখানে ছিলেন। এদিন রাত ন'টা নাগাদ সেখানকার কর্মীরাই প্রথম আগুন দেখতে পান। মূলত শর্ট-সার্কিট থেকেই আগুন লেগে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক অনুমান।একটি ঘরের এয়ারকন্ডিশনার মেশিনে বিস্ফোরণের মতোও শব্দ পাওয়া যায়।
বাংলোটির বেশিরভাগ অংশই কাঠ দিয়ে তৈরি হওয়ায়, আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে সেখানে উপস্থিত কর্মীরাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তারপরে রাত দশটা নাগাদ এসে পৌঁছায় দমকলের দুটি ইঞ্জিন। পৌঁছে যান বন দপ্তরের আধিকারিকরাও।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয় দমকলকর্মীদের। রাতে পাশের পুকুর থেকে জল নিয়েও আগুন নেভানোর চেষ্টা হয়।
তবে পর্যটক না থাকায় বাংলো এসি বা গিজার চলার কথা নয়। সেক্ষেত্রে শর্ট সার্কিট হলো কিভাবে সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। আগুন লাগার অন্য কোন কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা।