নিউজ ডেস্ক, হুগলি : অবশেষে আলোচনাতেই কাটলো জট। টানা তিন দিন ধর্মঘটের পর তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিল প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ীরা।
বুধবার হুগলির হরিপালে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসেন রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পরই ধর্মঘট তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। ফলে আশা করা যায় বৃহস্পতিবার থেকেই ফের বাজারে আলুর যোগান স্বাভাবিক হবে।
বাঙালির পাতে আলু আবশ্যিক। সেই আলু নিয়েই তৈরি হয়েছিল সমস্যা। আলু রপ্তানিতে পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি, যার জেরে আলুর আড়ত গুলিতে আলুর যোগান কমে যাওয়ায় বাজারেও তার প্রভাব পড়ে। যোগান কম থাকায় ঊর্ধ্বমুখী আলুর দামে সিদুরে মেঘ দেখছিল আমজনতা। তবে এই ধর্মঘট উঠে যাওয়ার ফলে উর্ধ্বমুখী আলুর দাম থেকে কিছুটা রেহাই মিলবে বলেই মনে করছে সাধারণ মানুষ।
বুধবার হরিপালে আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মন্ত্রী বেচারাম মান্নার বৈঠকের পরেই প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা জানান, আলোচনায় কিছুটা হলেও জট কেটেছে। যার ফলে আজ রাত থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন হিমঘর গুলি থেকে আলু বেরোনো শুরু হয়ে যাবে। এ বিষয়ে আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক জানান,‘‘বৃহত্তর স্বার্থে ধর্মঘট তুলে নেওয়া হল। আমরা সরকারের পাশে আছি। তবে রাজ্য থেকে যে আলু বাইরে যায়, সেই রফতানির বিষয়টিও যেন সরকার খেয়াল রাখে। মন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। বিবেচনা করে দেখবেন বলেছেন। আমরা আমাদের দাবিদাওয়া লিখিত ভাবে সরকারের কাছে জানাচ্ছি।’’
ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ডস্টোর অ্যাসোসিয়েশন’ এর এক সদস্য জানান, " আমাদের রাজ্যে ১১০ লক্ষ টন আলু উৎপাদন হয়। এত আলু আমাদের রাজ্যে খাওয়া যায় না। তাই ভিন্রাজ্যে পাঠাতেই হয়। আলু আমাদের রাজ্যের অন্যতম অর্থকরী ফসল। অর্থনীতিকে অনেকখানি নিয়ন্ত্রণ করে। আলুর দাম বেশি থাকলে চাষিরাও কিছু টাকা পান। তাই আলু যাতে ন্যায্য মূল্যে সবাই পান, সে দিকে খেয়াল রাখব।’’
অন্যদিকে বৈঠক থেকে বেরিয়ে মন্ত্রী বেচারাম মান্না জানান বৈঠক সদর্থক হয়েছে । তার কথায়,‘‘আমাদের দিক থেকে যা যা সাহায্য করা যায়, সেটা বলেছিলাম। সরকার পক্ষ সাড়া দিয়েছে। তাই ব্যবসায়ীরাও কর্মবিরতি তুলে নিচ্ছেন।" পাশাপাশি তিনি বলেন, ’‘আলু ব্যবসায়ীরা যদি কথা রাখেন, তা হলে আমরা ৩০ টাকার নীচে আলু খাওয়াতে পারব রাজ্যবাসীকে।’’
পাশাপাশি তিনি জানান অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বাংলায় আলুর দাম অনেক কম। বাংলায় আলুর যোগান স্বাভাবিক হলে বাইরে আলু রপ্তানি করা যায় কিনা সে বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করা হবে।