নিউজ ডেস্ক - হুগলির কোন্নগরে সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদে এক যুবতীর গায়ে গরম জল ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তার পিসতুতো ভাইয়ের পিসি এবং পিসেমশাইয়ের বিরুদ্ধে। বুধবার এই ঘটনার তদন্তে নামার পর অভিযুক্ত বাবা-ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে,কোন্নগরের শরৎচন্দ্র চ্যাটার্জি লেনের বাসিন্দা প্রণব কুমার আদকের মেয়ে ঐশ্বর্য আদকের উপর এই রকম হামলা করেন তাদের তিন আত্মীয়। গত ২ অগস্ট সন্ধ্যায় ২৫ বছরের ওই যুবতীর গায়ে গরম জল ঢেলে দেয় তার পিসতুতো নাবালক ভাই। গরম জলে সংস্পর্শে এসে শরীর-মুখ ঝলসে যায় যুবতীর। প্রণবের অভিযোগ, তাঁকে এবং তাঁর মেয়েকে পৈতৃক বাড়ি থেকে তুলে দিতে নানা রকমের পরিকল্পনা করেন বোন এবং ভগিনীপতি। গত ২ অগস্ট ঘটনার দিন তিনি কাজে গিয়েছিলেন। রাত ৯টা নাগাদ বাড়ি ফিরে মেয়ের কাছে জানতে পারেন এই অত্যাচারের কথা। প্রণবের দাবি, "আমার বোন বোরোলিন লাগিয়ে দেয় মেয়ের হাতে-মুখে। আর ভগিনীপতি আইসক্রিম খাওয়াতে নিয়ে যায় আমার মেয়েকে। যেন কিছুই ঘটেনি। বাড়ি ফিরে মেয়েকে দেখে আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি। ও এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে যে গুছিয়ে কথা বলতে পারছিল না। মানসিক ভাবেও ভেঙে পড়েছে। আমি এই অত্যাচারের বিচার চাই।" আপাতত ওই যুবতী বর্তমানে কোন্নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তাঁর কথায়, ‘‘উত্তরপাড়ায় ওদের নিজেদের বাড়ি থাকলেও গত পাঁচ বছর ধরে আমাদের পৈতৃক বাড়িতেই এসে থাকছে। সেই বাড়িতে আমি মেয়েকে নিয়ে থাকি। গত মে মাসে আমার স্ত্রীর মৃত্যু হওয়ার পর মেয়েটা একা হয়ে গিয়েছে বাড়িতে। আমি চাকরির সূত্রে দিনের বেশির ভাগ সময় বাড়ির বাইরে থাকি। সেই সুযোগে মেয়ের উপর নানা রকম অত্যাচার করে ওরা। এর আগেও এক বার ওর উপরে জলভর্তি পিতলের বালতি ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছিল আমার ভাগনে। সেটা আমি দেখে ফেলি। তখন ওরা বলেছিল, ‘অলৌকিক ঘটনা’। সে যাত্রায় মেয়েকে কোনও ভাবে বাঁচিয়েছি। আবার একই রকম ঘটনা!"
অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ অভিযুক্ত দীপঙ্কর মৈত্র এবং তাঁর নাবালক পুত্রকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার তাদের শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁর ছেলেকে জুভেনাইল আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
এই নিয়ে কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস বলেন, "সম্পত্তির জন্য মানুষ যে এত নির্মম হতে পারে, তা দেখেই খারাপ লাগছে। এই ঘটনা যদি সত্যি হয়, পুলিশ তার জন্য ব্যবস্থা নেবে। অভিযুক্তদের পক্ষে কেউ থাকবে না।"