২০১৮ সালে তন্ত্র সাধনা ও রোগ চালানের বুজরুকি দিয়ে নাবালিকাকে অপহরণ করে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে যাবজ্জীবন ও ফাঁসির সাজা শোনালো আরামবাগ আদালত।
মঙ্গলবার অভিযুক্ত সুশীলা ও সাগরিকা পণ্ডিত কে দোষী সাব্যস্থ করেন আরামবাগ আদালতের বিচারক কিশান কুমার আগরওয়াল । সুশীলাকে যাবজ্জীবন ও সাগরিকাকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়। সাজা শোনানোর পরই চাঞ্চল্য তৈরি হয় আদালত চত্বরে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ২ ফেব্রুয়ারি খানাকুল থানার রাধানগর গ্রামের এক বাসিন্দা খানাকুল থানায় তার ৪ বছরের নাবালিকা কন্যা নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে খানাকুল থানার পুলিশ। কয়েক দিনের মাথায় খানাকুলের ঘন্টু সিংহের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে পচা দুর্গন্ধ বেরতে থাকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে নাবালিকার পচা গলা দেহ উদ্ধার করা হয়।
ময়নাতদন্ত থেকে জানা যায় নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। পুলিশ ঘটনার গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করার পর জানতে পারে খুন হয়ে যাওয়া নাবালিকার দিদিমা সুশীলা গ্রামের এক তন্ত্র সাধক মুরারি পন্ডিতের কাছে যান।তিনি মুরারি কে বলেন বাড়িতে একজন অসুস্থ হয়ে পড়ে আছে।তখন মুরারি সুশীলা কে আশ্বস্থ করে বলে একটি নাবালিকা কে সঙ্গে করে আনতে হবে।অসুস্থ ব্যাক্তির রোগ ওই নাবালিকার শরীরে চালান করে দেবে।তাতেই অসুস্থ ব্যাক্তি সুস্থ হবে।পুলিশ মুরারি কে গ্রেপ্তার করে।নাবালিকার দেহ ময়না তদন্তের পর ও ঘটনাস্থল থেকে রক্তের নমুনা পরীক্ষার পর সেগুলি অভিযুক্ত মুরারি ও তার স্ত্রী সাগরিকার নমুনা মিলে যায়।তারপরেই পুলিশ মুরারি,তার স্ত্রী সাগরিকা ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকা নাবালিকার দিদিমা সুশীলা কে গ্রেপ্তার করে ঘটনার সাত দিনের মাথায়।
তারপর থেকেই মামলা চলছিল আদালতে। মামলায় মোট ১৮ জন স্বাক্ষী দিয়েছে।হুগলির গ্রামীণ পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন,নৃসংশ ও হারহিম করা ঘটনায় অপহরণ, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় পকসো আইনে আসামীদের যাবজ্জীবন ও ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে আরামবাগ আদালত।