জলপাইগুড়ি, ১০ এপ্রিল ২০২৫: নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে ২৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে জলপাইগুড়ির পক্সো আদালত। ২০১৯ সালে জলপাইগুড়ি শহরে সংঘটিত এই ঘটনায় ওই নাবালিকা গর্ভবতী হয়ে পড়েছিল। অভিযুক্ত ছিলেন ভুক্তভোগীর দাদুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বুধবার বিচারক রিন্টু সুর রায় ঘোষণা করেন, যেখানে অভিযুক্তকে ২৫ বছর জেলের সঙ্গে এক লক্ষ টাকা জরিমানা এবং ভুক্তভোগীর পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার বিবরণ
জানা গেছে, ওই নাবালিকা তার দাদু-দিদার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত। ২০১৯ সালের জুন মাসে দাদুর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু তাকে ধর্ষণ করে। এরপর সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে এবং ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর জলপাইগুড়ি মহিলা থানার পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তখন নাবালিকা সাত মাসের গর্ভবতী ছিল এবং পরে তার সন্তান প্রসবও হয়।
আইনি প্রক্রিয়া ও রায়
মামলার তদন্ত শুরু হওয়ার পর পক্সো আদালতে বিচার প্রক্রিয়া চলে। ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর উভয় পক্ষের যুক্তি শোনা হয়। পক্সো আদালতের সরকারি আইনজীবী দেবাশীস দত্ত জানান, “অভিযোগ দায়েরের সঙ্গে-সঙ্গে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। বিচারে প্রমাণিত হয়েছে যে অভিযুক্ত এই জঘন্য অপরাধ করেছে।” বুধবার বিচারক রিন্টু সুর অভিযুক্তকে ২৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন। জরিমানার টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে অতিরিক্ত দুই মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। এছাড়া, ভুক্তভোগীর পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ডিস্ট্রিক্ট লিগাল এইড সার্ভিস অথরিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সমাজে প্রতিক্রিয়া
এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। পক্সো আইনের অধীনে দ্রুত বিচার এবং কঠোর শাস্তির এই উদাহরণ শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধের ক্ষেত্রে আইনের কঠোরতা তুলে ধরেছে। দেবাশীস দত্ত বলেন, “এই রায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।”
এই ঘটনা জলপাইগুড়ি শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। আদালতের এই রায়ে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি ভুক্তভোগীর জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।