কেন্দ্র পহেলগাঁওয়ের বৈসরান উপত্যকা রক্তাক্ত হয়ে ওঠে এক নারকীয় জঙ্গি হামলায়। সেদিন প্রাণ হারান ২৬ জন, যাঁদের মধ্যে ছিলেন সাহসী স্থানীয় বাসিন্দা সইদ আদিল হুসেন শাহ। তবে তিনি ছিলেন না পর্যটক। জীবিকা নির্বাহ করতেন খচ্চর চালিয়ে—পর্যটকদের পাহাড়ি পথে ভ্রমণে সাহায্য করতেন নীরবে, নিষ্ঠাভরে।
হামলার দিন, চারজন সশস্ত্র জঙ্গি আকস্মিকভাবে পর্যটকদের ওপর গুলি চালায়। হাহাকার, আতঙ্ক আর রক্তপাতের মাঝেও দাঁড়িয়ে যান আদিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, এক মহিলা পর্যটককে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন তিনি। এক জঙ্গিকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন, এমনকি তাঁর আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা করেন। এই সাহসিকতার জবাবেই জঙ্গিদের গুলিতে ঝরে যায় তাঁর প্রাণ।
সইদ আদিল ছিলেন দুই সন্তানের জনক ও পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাঁর এই আত্মবলিদান যেন পুরো কাশ্মীরবাসীর বিবেক নাড়িয়ে দেয়। একদিকে যেমন শোক, তেমনি গর্বে ভরে উঠেছে তাঁর গ্রাম। তাঁর মৃত্যু কেবল একটি পরিবারের নয়, পুরো সমাজের হৃদয়ে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে।
এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামে একটি জঙ্গি সংগঠন, যারা দাবি করেছে বাইরের লোকেদের কাশ্মীরে বসবাস বন্ধ করতে তারা এই হামলা চালিয়েছে। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ইতিমধ্যেই অভিযানে নামে এবং দুই জঙ্গিকে নিকেশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন ও দোষীদের কঠোর শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন।
আদিল হুসেন শাহের বীরত্বপূর্ণ মৃত্যু তাঁর নামকে স্থানীয় সাহসিকতার প্রতীক করে তুলেছে। দেশজুড়ে চলছে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জ্ঞাপন। তাঁর আত্মত্যাগ মনে করিয়ে দেয়—অমানবিকতার অন্ধকারে একজন মানুষের সাহস কিভাবে আলোর প্রদীপ হয়ে উঠতে পারে।