WAQF: সুপ্রিম কোর্টে মহুয়া মৈত্রের মামলা, তৃণমূলের পাশাপাশি কংগ্রেস-আরজেডির প্রতিবাদ


নয়া দিল্লি, ৯ এপ্রিল ২০২৫: সম্প্রতি কার্যকর হওয়া ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনি প্রথম অমুসলিম মহিলা, যিনি এই আইনের বৈধতা নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। এর আগে কংগ্রেস, আরজেডি, এআইএমআইএম এবং আম আদমি পার্টির নেতারা একইভাবে এই আইনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মঙ্গলবার থেকে দেশজুড়ে আইনটি কার্যকর হওয়ার পর কেন্দ্র একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে এবং সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট দাখিল করে মামলায় তাদের বক্তব্য শোনার আবেদন জানিয়েছে।

মহুয়া মৈত্রের মামলা ও বক্তব্য

ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস হওয়ার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে সরব মহুয়া মৈত্র। তিনি এই আইনকে ‘জনবিরোধী’ এবং ‘মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। বিল পাসের দিন তিনি বলেছিলেন, “ভারতের গণতন্ত্রের ইতিহাসে এটা একটা কালো দিন। এই সংশোধনী মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেছিলেন, বিলের পক্ষে ও বিপক্ষে ভোটের সংখ্যার পার্থক্য খুবই কম ছিল, যা এর জনবিরোধী চরিত্রকে স্পষ্ট করে। এবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে তিনি আইনটির সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

অন্যান্য দলের মামলা

মহুয়া মৈত্রের আগে এই আইনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন আরজেডি নেতা মনোজ ঝা, কংগ্রেসের সাংসদ মোহাম্মদ জাওয়েদ, এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি এবং আম আদমি পার্টির বিধায়ক আমানতুল্লাহ খান। এই নেতারা মনে করেন, ওয়াকফ সংশোধনী আইন সংবিধানের মৌলিক অধিকার, যেমন সমতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সম্পত্তির অধিকারের বিরোধী। এ পর্যন্ত মোট ১৬টি মামলা দায়ের হয়েছে, যা আগামী ১৬ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে শুনানির জন্য উঠতে পারে।

কেন্দ্রের ক্যাভিয়েট

আইনটির বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান মামলার মুখে কেন্দ্র সরকার সুপ্রিম কোর্টে একটি ক্যাভিয়েট দাখিল করেছে। এর মাধ্যমে তারা আবেদন জানিয়েছে যে, এই মামলায় কোনো রায় দেওয়ার আগে কেন্দ্রের বক্তব্য শোনা হোক। কেন্দ্রের দাবি, এই আইন ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা আনতে সাহায্য করবে। তবে বিরোধীরা মনে করছেন, এটি ধর্মীয় সম্পত্তির উপর অতিরিক্ত সরকারি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে।

বিতর্কের কেন্দ্রে ওয়াকফ আইন

ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫ সংসদে পাসের সময় থেকেই তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, এই আইন মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও সম্পত্তির অধিকার ক্ষুণ্ন করছে। বিশেষ করে, ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি এবং সম্পত্তির উপর বাড়তি সরকারি তদারকির বিষয়টি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

পথ কোন দিকে?

আগামী দিনে সুপ্রিম কোর্টের রায় এই আইনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। মহুয়া মৈত্রের মামলা তৃণমূল কংগ্রেসের এই ইস্যুতে দৃঢ় অবস্থানের ইঙ্গিত দিচ্ছে। একইসঙ্গে কংগ্রেস, আরজেডি এবং অন্যান্য বিরোধী দলের মামলাগুলো এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতার উপর নতুন করে আলোকপাত করছে। এই আইন নিয়ে রাজনৈতিক ও আইনি লড়াই আরও জোরদার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please Type Your Valuable Feedback.
Keep Supporting. Flow as on YouTube & Facebook.

নবীনতর পূর্বতন